বাংলাদেশে সংস্কৃতির নবজাগরণ, সবার আগে কনসার্টে সৃজনশীলতার মুক্তির বার্তা

অনলাইন ডেস্ক

২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০২ পিএম | আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৩ পিএম

বাংলাদেশে রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সংকটের মধ্য দিয়ে একটি নতুন সম্ভাবনার সূচনা করেছে 'সবার আগে বাংলাদেশ' কনসার্ট। বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর আয়োজিত এই কনসার্টে ঐক্যের বার্তা ও সৃজনশীলতার উন্মোচন ঘটেছে। এটি দেশের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে দীর্ঘকাল ধরে চলে আসা একপাক্ষিকতার বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

দুই দশক পর বাংলাদেশের প্রখ্যাত রক গায়ক হাসান ১৬ ডিসেম্বরের কনসার্টের মঞ্চে ফিরে আসেন। দীর্ঘ অনুপস্থিতির পেছনে ছিল তার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিস্ট হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সাংস্কৃতিক দমননীতির প্রতি আপোষহীন অবস্থান।গত ৫ আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সেই সরকারের পতনের পর নতুন মুক্তির স্বাদ নিয়ে হাসানের ফিরে আসা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি দৃশ্যের মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। তার জনপ্রিয় গান "যারে যা উড়ে যা, পাখি তারে বলে যা" পরিবেশনের সময় পাখির মতো উড়ার ভঙ্গি দেশের সংস্কৃতিতে পরিবর্তনের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সবার আগে বাংলাদেশ কনসার্টটি শুধু একটি সংগীতানুষ্ঠান ছিল না, এটি ছিল নতুন বাংলাদেশ গড়ার একটি সাংস্কৃতিক প্রকাশ। বিভিন্ন প্রজন্ম ও পটভূমি থেকে আসা মানুষদের একত্রিত করেছে এই কনসার্ট। রক, ফোক, এবং ক্লাসিকাল সংগীতের বৈচিত্র্যপূর্ণ পরিবেশনা দর্শকদের মুগ্ধ করেছে।

দীর্ঘকাল ধরে হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রকে একপাক্ষিক দৃষ্টিভঙ্গিতে আবদ্ধ করে রেখেছিল। সমস্ত জাতীয় দিবসগুলোকে দলীয় প্রচারণার দিন হিসেবে রূপান্তরিত করা হয়েছিল। বিভিন্ন সৃজনশীল ধারাকে দমন করা হয়েছিল, আর ভিন্নমতাবলম্বীদের দাগানো হয়েছিল রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে।

কিন্তু 'সবার আগে বাংলাদেশ' কনসার্ট সেই সাংস্কৃতিক একাধিপত্যের অবসান ঘটানোর একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এটি দেখিয়েছে যে সত্যিকার গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি কেবলমাত্র বৈচিত্র্যের মাধ্যমেই গড়ে তোলা সম্ভব। কনসার্টটি প্রমাণ করেছে যে একীভূত জাতীয় সংস্কৃতির ভিত্তি তৈরি হয় সমাজের প্রতিটি কণ্ঠকে সম্মানের সাথে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে।

এই কনসার্টটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক নবজাগরণের শুরু। সৃজনশীলতার স্বাধীনতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের প্রতিভা ও সংস্কৃতি তার পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জন করতে পারে।সবার আগে কনসার্ট আমাদের দেখিয়েছে যে বৈচিত্র্যকে সম্মান জানিয়ে এবং সকলের সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করে একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক ও ঐক্যবদ্ধ সংস্কৃতি গড়ে তোলা সম্ভব। তথ্যসূত্র : স্ক্রল ইন

বিভাগ : বিনোদন